বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০২০

গাইবন্ধায় করোনায় আক্রান্ত ২ ছড়িয়েছে আরও ১০৫--

জানা গেছে গাইবন্ধায় করোনায় আক্রান্ত ২ ছড়িয়েছে আরও ১০৫--


গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুই প্রবাসীর সংস্পর্শে আসা ১০৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ জনকে শনাক্ত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিনিধিদল। এ ছাড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ স্থানীয়ভাবে ১৬ জনকে শনাক্ত করে। তবে ১০৫ জনের মধ্যে কতজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তা জানায়নি আইইডিসিআর।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন এ বি এম আবু হানিফ বলেন, অল্প কয়েকজনের রক্ত ও কফ নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু সংখ্যায় তা কত, সেটা বলা যাচ্ছে না। আইইডিসিআরের প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার রাতে এসব নমুনা নিয়ে ঢাকায় ফিরে গেছেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসে আরও আক্রান্ত আছেন কি না, তা জানা যাবে।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২। তাঁরা ১০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের গাইবান্ধায় আসেন। ১৫ মার্চ গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে প্রবাসী মা ও ছেলের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। পরে আইইডিসিআর জানায়, তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। সেই থেকে তাঁরা গাইবান্ধা শহরে এক আত্মীয়ের বাসায় আছেন।

দুই প্রবাসীর সংস্পর্শে এসেছিলেন এমন ২০ জনসহ হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ২২৬ জন। এর মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ৬২ জন, সুন্দরগঞ্জে ৪৫ জন, সদরে ৩৭ জন, সাদুল্যাপুরে ২১ জন, সাঘাটায় ১৯ জন, পলাশবাড়ীতে ১৭ জন ও ফুলছড়িতে ১৬ জন এবং বগুড়ায় ৯ জন। বগুড়ার ৯ জন গাইবান্ধায় এক বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তাঁরা বগুড়ায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার আইইডিসিআরের একটি প্রতিনিধিদল গাইবান্ধায় যায়। চার সদস্যের এই দলের নেতৃত্ব দেন আইইডিসিআরের চিকিৎসক সোহেল রহমান। প্রতিনিধিদলটি হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণের জন্য গাইবান্ধায় যায়। ঢাকা থেকে আসা দলটি প্রথমত সাদুল্যাপুরে বিয়েবাড়িতে যাঁরা আক্রান্ত দুই প্রবাসীর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ করে। তাঁরা হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে নমুনা হিসেবে রক্ত ও কফ সংগ্রহ করেন।
গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আইইডিসিআরের প্রতিনিধিদল এই কাজ করে। এ সময় তারা দুই প্রবাসীর সংস্পর্শে আসা ৮৯ জনকে শনাক্ত করে। আর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ স্থানীয়ভাবে ১৬ জনকে শনাক্ত করেছিল। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিনিধিদলটি নমুনা হিসেবে রক্ত ও কফ সংগ্রহ করে। এরপর তারা রাতে ঢাকায় ফেরে।
কতজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জানতে চাইলে আইইডিসিআরের প্রতিনিধিদলটির প্রধান সোহেল রহমান কথা বলতে রাজি হননি।

আজ সকালে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, গতকাল থেকে গাইবান্ধায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তারা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছে।
সাদুল্যাপুর উপজেলায় বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১১ মার্চ দুই প্রবাসী আসেন। ১৩ মার্চ বিয়ের অনুষ্ঠানে দুই প্রবাসীসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ যোগ দেন। ১৫ মার্চ দুই প্রবাসী গাইবান্ধা শহরে এক আত্মীয়ের বাড়ি চলে যান। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অনেকে ২১ মার্চ গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের উপনির্বাচনে ভোট দেন। এর মধ্যে দুই প্রবাসীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে গত রোববার থেকে তাঁদের গাইবান্ধা শহরে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
সাদুল্যাপুরে দোকানপাট বন্ধ, শহর ফাঁকা
আজকেও সাদুল্যাপুর উপজেলা শহর অনেকটা ফাঁকা। গত সোমবার থেকে এই অবস্থা চলছে। সকালে উপজেলা শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে লোকজনের উপস্থিতি কম। হাট-বাজারে তেমন লোকজন ছিল না। যানবাহন চলাচল অনেক কম ছিল। মাস্ক না পরে কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: