বেসরকারি ও গার্মেন্টস কর্মীদের ঢাকায় ফিরতে দৌলতদিয়া ঘাটে প্রচণ্ড ভিড় জমেছে। শনিবার দুপুর খেকেই এই ভিড়। এতে সামাজিক দূরত্ব মানতে পারছে না তারা। ফলে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে অসংখ্য মানুষ শনিবার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে ভিড় করেছে পদ্মা পাড়ি দেয়ার জন্য।
লঞ্চ ও অন্য ট্রলার পারাপার বন্ধ থাকায় শত শত মানুষ গাদাগাদি করে ফেরিতে পার হচ্ছে।দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মমুখী মানুষ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথ পারি দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ফরিদপুর-দৌলতদিয়া মহাসড়কে পায়ে হেঁটে, ভ্যান-ট্রলি এবং পিকআপ ভ্যানে করে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন পোশাক শ্রমিকরা।শনিবার সকাল ১০টার দিকে এমন চিত্র দেখা যায় খুলনা-দৌলতদিয়া মহাসড়কে।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ রনি জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে এখন ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। তবে আজ শনিবার থেকে গাড়ির চেয়ে মানুষই বেশি পার হচ্ছে।
ফেরির সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় একটা ফেরি ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাতে ওঠার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পরছে।বেসরকারি চাকরিজীবী ও গার্মেন্টসকর্মী নারী-পুরুষ একসঙ্গে প্রত্যেক ফেরিতেই ভিড় করে পার হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, খুলনা, ফরিদপুর-দৌলতদিয়া মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে ঢাকামুখী যাত্রীরা কেউ হেঁটে যাচ্ছেন আবার যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা ভালো তারা ভ্যান বা পিকআপে করে ছুটে চলছেন ঢাকার দিকে।অতি কষ্ট করে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে এলাকাভিত্তিক প্রতিজনের ভাড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লেগেছে।
ভাড়া যেখানে দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা আর সেখানে এক স্টপেজ থেকে অন্য স্টপেজে যাওয়ার জন্য ভাড়া গুণতে হচ্ছে একশ টাকা তবুও অতিরিক্ত টাকা দিয়েই যাচ্ছেন পোশাক শ্রমিকরা।ঢাকার মহাখালীর পোশাক কারখানার শ্রমিক গোলেজান বিবি জানান, কারখানা খুলে গেছে তাই যাচ্ছি। আজ কারখানায় উপস্থিত না হতে পারলে যে কয়দিন ছুটি পাইছি সে কয়দিন অনুপস্থিত দেখাবে কর্তৃপক্ষ।
যার কারণে অতিরিক্ত টাকা দিয়েই কারখানায় যাচ্ছি।সাইদুল নামে আরেক পোশাক শ্রমিক বলেন, আমি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। কুষ্টিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে তার লেগেছে সাড়ে তিনশ টাকা।
পথে যে ভাড়া তার চেয়ে পাঁচ সাত গুণ ভাড়া চাচ্ছে পিকআপ ভ্যানের চালকরা। আমার কাছে এত টাকা নাই তাই বাধ্য হয়েই মোবাইল ফোন কম দামে বিক্রি করে দিয়ে যাচ্ছি।গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সব মহাসড়কে আঞ্চলিক গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া কাটা গাড়িও বন্ধ আছে এবং এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। গতকাল থেকে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথ পারি দিয়ে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
0 coment rios: