মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। এই ছুটির কারণে দেশের করোনা পরিস্থিতির তেমন অবনতি হয়নি। কারণ গত দুই দিনে দেশে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি। আর আজ সোমবার পর্যন্ত এক জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
বিপরীতে আগে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন আরো চারজন। ফলে চলমান সাধারণ ছুটি করোনার বিস্তার ঠেকাতে ভূমিকা রেখেছে এবং সে কারণে ছুটি আরো বাড়ানো দরকার বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, ঘোষিত সাধারণ ছুটির আরো কয়েকদিন বাকি আছে। এর মধ্যে দেশের পরিস্থিতি আরো স্পষ্ট হবে।
অবশ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, যে কয়দিন ছুটি বাকি আছে, তাতে যদি কেউ আক্রান্ত নাও হয় তারপরও ছুটি বাড়ানো ছাড়া এই মুহূতে বিকল্প কোনো উপায় নেই। ঝুঁকি কমানো বা ঝুঁকিমুক্ত থাকতে ছুটি বাড়ানো উচিত। কারণ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে তো আবশ্যিকভাবেই ছুটি বাড়ানোর দরকার হবে।
এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ছুটি বাড়নো হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী। ছুটি যদি বাড়ানো হয় সেক্ষেত্রে কত দিন বাড়ানো হবে সেটা আলাপ-আলোচনা প্রধানমন্ত্রীই ঠিক করবেন। তবে কোনো কোনো কর্মকর্তা মনে করছেন, ছুটি বাড়ানো হলে তা ১১ এপ্রিল কিংবা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত হতে পারে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ছুটি আরো কিছু দিন বাড়ানোর অনুরোধ থাকবে আমাদের। এতে আমরা আরো ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারবো।’এর আগে গতকাল রোববার আইইডিসিআরের সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মরণঘাতী এ ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ বিশেষ ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে দেশে ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। যা শেষ হবে আগামী ৪ এপ্রিল। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া সকল ধর্মীয়, সামাজিক ও অন্যান্য অনুষ্ঠান ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বন্ধ রয়েছে বাস, লঞ্চ ও ট্রেনসহ যাবতীয় গণপরিবহন।
স্থগিত করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সকল ফ্লাইট। ওষুধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ছাড়া সকল ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেইসঙ্গে পোশাক কারখানাও বন্ধ ঘোষণা করা রয়েছে। উল্লিখিত পদক্ষেপগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে মাঠে সাধারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রয়েছে সশস্ত্রবাহিনী। চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।
গত ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর পর থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত দেশে ৪৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছে ৫ জন। এ ছাড়া সুস্থ হয়েছেন ১৯ জন।
0 coment rios: