শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০

দুনিয়াতে আল্লাহকে স্বপ্নে দেখা কি সম্ভব?

সম্ভব কিন না? নব্য নামধারী আহলে হাদিসরা বলে আল্লাহ তা’আলাকে স্বপ্নে দেখা সম্ভব নয়। আর আমাদের আলেম উলামারা যখন ইমাম আবু হানিফা আর অন্য ইমাম গন আর নেক্ষার আল্লাহ ওয়ালাদের আল্লাহকে স্বপ্নে দেখা নিয়ে আলোচনা করেন তখন এই অজ্ঞরা আলেম উলামাদের নিয়ে বেংগ আর বিদ্রুপ করে। অথচ তাদের মান্নব্যর মুরশিদরা আল্লাহকে স্বপ্নে দেখা সম্ভব বলে উল্লেখ্য করেছেন ।
আর ফাযায়েলে আমলের মাঝে ইমাম আহমদ রহ. আল্লাহকে দেখেছেন বলে উল্লেখ
রয়েছে তাই তারা বলে এই কিতাবে শিরক আছে?
আসলে আমরা গবেষনা করে দেখি কার কথা সঠিক আর কার ফাতাওয়ায় কে শিরক করছে?
উত্তর :
প্রথমে আমরা আহলুছুন্নাহ ওয়ালজামাতের মত কি ইমাম নববির কথার ধারা একটু অবলোকন করি:
ইমাম নববি রহিমাহুল্লাহ উল্লেখ করেন যে, ইমাম আল কাজী আয়াজ আল মালেকি রহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘উলামাগনের ইত্তেফাক(ইক্যমত/ইজমা) আছে যে, আল্লাহ তা’আলাকে স্বপ্নে দেখা সম্ভব।’
[শারাহ মুসলিম ১৫/২৫]
.
.
আল্লাহ তায়ালাকে দুনিয়াতে দেখা সম্ভব আর
তার পদ্ধতি নিয়ে রয়েছে মতনক্য, অর্থা স্বপ্নে মাঝে নাকি বাস্তবে। (আর দেখা সম্ভব নয় এই কথাটি সম্পূণ ভুল)। এই পরিসরে আহলে হাদীসদের মহাগুরু আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) লিখেছেন
অর্থাত : মানুষ আল্লাহ তায়ালাকে দেখতে পারবে কি না তা নিয়ে তিনটি মতামত রয়েছে
(1) সাহাবা এবং তাবেয়ী ও মুসলিম বড় ইমামদের নিকটে আল্লাহ তায়ালাকে দুনিয়াতে সরাসরি দেখা
সম্বব নয় কিন্তু স্বপ্নের মাঝে দেখা সম্ভভ........!
(2)একটি ভ্রান্ত্র দল যারা গোমরাহ বলে পুরা উম্মত একমত তার হলো যাহমীয়াহ তারা বলে আল্লাহকে দুনিয়া ও আখেরাত কোথাও দেখা সম্ভব নয়
(3)যারা বলেন দুনিয়া ও আখেরাত সবস্থানেঐ
দেখা সম্ভব.....।
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-2/336 )
অতএব এই তিনটি মত থেকে দ্বিতীয় মত টি সম্পূণ ভুল, বাকি দুইটি মতামত নিয়ে আমরা আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ।
উত্তরটি জানার পূর্বে একটি কথা জানা উচিত
আল্লামা ইবনে তামিয়া রহ. বলেন:
অর্থাত : যে ব্যাক্তি আল্লাহকে স্বপ্নে দেখে, সে তার আমল অনুসারে বিভিন্ন অবস্থায় দেখে, তথা সে যদি নেককার পরহেজগার হয় তাহলে সে আল্লাহকে ভালো ভাবে দেখে যেমন নাকি রাসুল সা. আল্লাহকে খুব সুন্দর অবস্থায় দেখেছেন।
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-5/251)
এবার দেখুন.............হাদিসের আলোকে:
অথাত : হযরত আবূ যর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসুল (সা.) কে প্রশ্ন করলাম আপনি কি আল্লাহকে
দেখেছেন?
অতপর তিনি উত্তর দিলেন হ্যাঁ আমি আল্লাহকে নুরান্নীত তথা উজ্বল অবস্থায় দেখেছি।
(মুসলিম-1/161 হাদীস নং-291 )
2।সহীহ মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বরনিত:
তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, আমি নিজ আত্মা দ্বারা আল্লাহকে দুইবার দেখেছি।
(মুসলিম-1/158 হাদীস নং-285)
3।আর মুসলিম শরীফের অন্য বরণনায়
» ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে তিনি বলেন রাসূল (সা.) নিজ আত্মা দ্বারা আল্লাহেক দেখেছেন,
(কিন্তু এই হাদীসে কত বার দেখেছেন তা উল্লেখ নেই।
(মুসলিম-1/158 হাদীস-284)
4। একদা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর
(রা.) তাওয়াফ করছিলেন ! তখন তাকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) তার মেয়ে এর বিবাহের ব্যাপারে প্রস্তাবদে তখন তিনি বললেন, তুমি মহিলাদের বিষয়ে কথা বলছো!!! আর আমিতো তাওয়াফ অবস্থায়
আল্লাহকে দেখছি। এই হাদীসটি প্রায়
100 টিরও বেশি কিতাবে উল্লেখ রয়েছে সহীহ
সনদে:
যেমন
প্রথমে আমি ইবনে তাইমিয়াকে দিয়ে শুরু করছি-
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-5/251,)
(শরহু সহীহীল বুখারী লি ইবনে বাত্তাল-4/301,)
(বাহরুল ফুয়াদ-150,) (শারহু আকিদা আল ওয়াসেতিয়া-5/14), (আদাবুন নাফস-=105 ইত্যাদি।)
5। হযরত হারেসা (রা.) বলেন:
আমি আমার আত্মাকে দুনিয়া থেকে এমন বাভে মুক্ত
রেখেছি, যার কারণে আমি সরাসরি আল্লাহর আরশে তাকিয়ে আছি, আর আমি তাকিয়ে আছি জান্নাতের নেয়ামত প্রাপ্ত আর জাহান্নামে সাজা প্রপ্ত ব্যক্তিদের প্রতি।
(বাহরুল ফাওয়ায়েদ-150)
6। হযতর আলি রা. আব্দুল ইবনে আব্বাস
(রা.) সম্পর্কে বলেন:
তিনি বলেন আমি আল্লাহর প্রতি তাকিয়ে আছি আমার আর তার মাঝে একটি পাতলা পর্দা ব্যতিত আর কিছু নেই।
(বাহরুল ফাওয়ায়েদ-150 )
সন্মানিত পাঠক বিন্দু যদি এ ধরনের গঠনা সাহাবী ও
রাসূল (সা.) এর সম্পর্কে আমরা দেখতে পাই
তাহেল এগুলো বিশ্বাস না করে কি
কথিত আহাফি আর সালাফীদের ভ্রান্ত মতবাদগুলো বিশ্বাস করবো??
আর এগুলো কি বুযুগদের গঠনা??? আর প্রকৃত ভাবে এবাদত করল আল্লাহকে দেখা সম্ভভ তার প্রমান ইবনে উওর (রা) এর হাদীসটি তাছাড়াও বুখারী শরীফের মাঝে আছে:
তুমি এমন ভাবে এবাদত কর
যাতে করে তুমি আল্লাহকে দেখতেছো।
প্রিয়
পাঠক যদি আল্লাহকে দেখা অসম্ভব হতো দুনিয়াতে তাহেল রাসূল (সা.) মানুষের ইবাতের মাধ্যমে আল্লাহকে দেখার প্রতি লোভ দেখালেন কেন?
তারা কি বুখারীর এই হাদীসটি দেখে না।
(বুখারী-1/19 হা.50)
******আল্লাহকে স্বপ্নে দেখেছেন এমন কিছু গঠনা********** যার সবগুলোই ইবনে তাইমিয়া রহ.এর
কিতাব থেকে:
হযরত আবূ ইয়াযিদ রহ. এর সম্পর্কে বণনা রয়েছে যে, তিনি বলেন আমি স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছি, অতপর আমি বললাম হে আমার প্রতি পালক আমি কি ভাবে আপনাকে পাবো? তিনি বললেন তুমি তোমার নফস কে ছেড়ে দাও তথা মন চাহিদা আত্মার কথা পরিত্যাগ কর।
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-2/351)
2। তেমনি ভাবে আবি মারসাদ
সম্পর্কে বর্ণিত একই গঠনা একি অথ।
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-9/293)
3। তেমনী ভাবে আবূ ইয়াজিদ আল
বুসতামী সম্পর্কে একি গঠনা বণনা
আছে :
তিনি বলেন আমি স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছি, অতপর আমি বললাম হে আমার প্রতি পালক আমি কি ভাবে আপনাকে পাবো? তিনি বললেন তুমি তোমার নফস কে ছেড়ে দাও তথা মন চাহিদা আত্মার কথা পরিত্যাগ কর।
তিনি বলেন অতপর আমি আমার নফস থেকে এমন ভাবে আলাদা হয়ে গেলাম যেমন বাভে সাপ তার চামড়া থেকে আলাদা হয়ে যায় (খলোস পরিবতন করে)
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-10/518)
************ আরো কিছু
কথা যা না প্রয়োজনন **************
হযরত ওবাদা ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত-
তিনি বলেন, মুমিন তার ঘুমে স্বাপ্নের মাঝে আল্লাহর সাথে কথা বলে থাকে।
(ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া-15/98)
ইমাম তাবরানী রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন, রুকাবা ইবনে মাসকালাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি আল্লাহকে স্বপ্নে দেখলাম আর আল্লাহ তা’আলা বললেন : আমার ইজ্জত ও জালালের কসম আমি সুলাইমান তাইমির সম্মান করবো।
( মু’আজমাউল আউসাত ৩/৩৭৯)
এছাড়া আরো ঘটনা পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে প্রকাশ পেয়েছে।
এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা সালফে সলেহিনগনের মধ্যে পাওয়া গেছে কিন্তু দুঃখের বিষয় এসব ঘটনাকে বর্তমান সময়ে ভ্রান্তদল নামধারী আহলে হাদিস এবং উগ্র মিজাজের সালাফিরা ভ্রান্ত বলে আখ্যায়িত করে।
এবিষয়ে সালাফি ও নামধারী আহলে হাদিস ফিরকার মান্যবর আলিম বিশিষ্ট আলিম বিন বায রহিমাহুল্লাহ তাঁর নিজ ফতওয়ার কিতাবে উল্লেখ করেন,
‘কিন্তু স্বপ্নে তাঁর(আল্লাহ তা’আলার) সাক্ষাৎ হওয়া সম্ভব’
[ফাতওয়ায়ে বিন বায ২/১২৯]
নামধারী আহলে হাদিসদের মূখ্য আলিম, যাঁর দ্বারাতেই এই নামধারী আহলে হাদিস ফিরকার সূত্রপাত
[ সূত্র – ৪০ উলামায়ে আহলে হাদিস..]
মাওলানা নাজির হুসাইন দেহলবি সাহেব বলেন,
‘যদি কেও বলে আমি আল্লাহ তা’আলাকে স্বপ্নে দেখেছি তাহলে জায়েজ হবে’
[ফাতাওয়া নাজেরিয়া ১/৬২]
এছাড়াও আরো অস্ংখ্য প্রমাণাদি আছে। আল্লাহ আমাদের কে সঠিক বুঝ দান কারুন এবং কথিত আহাফি সালাফীদের ফেতনা থেকে বাচার তাওফীক
দান করুন আমীন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: